ওমর ফারুক:: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসছে। ভোটরদের মাঝে নির্বাচনী আমেজ বাড়ছে। গ্রাম-গঞ্জ, হাটবাজার থেকে শুরু করে সর্বত্রই আলোচিত হচ্ছে নির্বাচনী আলোচনা। চায়ের হোটেল থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহলের আলোচনায় ভোটাররা সকল দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের যোগ্যতা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছেন। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্ট নেতৃত্বাধীন বিএনপি জোট থেকে কারা সিলেট-৫ আসনে প্রার্থী হতে পারেন তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষন। সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) নির্বাচনী এলাকা থেকে মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী হয়ে লড়তে দেড় ডজন নেতা দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ৬ জন, বিএনপির ৭ জন ও জাতীয় পার্টির ৫ জন দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন। আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতারা দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের আগে নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালালেও এখন অনেকটা নিরব। কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে আছেন তারা। অপেক্ষায় কাটছে তাদের দিন-রাত। এরপরও থেমে নেই তদবির। কারা হচ্ছেন এ আসনে বড় দুই জোটের মনোনীত প্রার্থী তা শুনতে আগ্রহে রয়েছে ভোটাররাও।
মহাজোটের প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার লক্ষে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ড. হাফিজ আহমদ মজুমদার, জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সীমান্তিকের প্রতিষ্ঠাতা ড. আহমদ আল কবির, ঢাকাস্থ সিলেট বিভাগীয় আইনজীবি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি মোশতাক আহমেদ, রমনা থানা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর ফয়জুল মুনির চৌধুরী, সিলেট মহানগর কৃষকলীগের সভাপতি আব্দুল মোমিন চৌধুরী, আওয়ামীলীগ নেতা ফয়সল আহমদ রাজ।
জাতীয় পার্টি থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিক উপদেষ্ঠা ও সংসদের বিরোধীদলীয় হুইপ আলহাজ্ব সেলিম উদ্দিন এমপি, জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব শাব্বির আহমদ, কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির অন্যতম নির্বাহী সদস্য ও সিলেট জেলা ছাত্র সমাজের সাবেক সভাপতি শিল্পপতি এম জাকির হোসেইন, জাপার কেন্দ্রীয় নেতা এম এ মতিন চৌধুরী ও কেন্দ্রীয় সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ।
ড. কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন বিএনপি জোট থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ইকবাল আহমদ তাপাদার, কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী. সিলেট জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ও কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি মামুনুর রশীদ চাকসু মামুন, জকিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রবাসী শরিফ লস্কর, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি ছিদ্দিকুর রহমান পাপলু, আরব আমিরাত বিএনপির সভাপতি প্রবাসী জাকির হোসাইন, যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রবাসী জাহিদুর রহমান। তবে জামায়াতের চূড়ান্ত প্রার্থী মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী। ঐক্যফ্রন্ট থেকে তিনি নির্বাচন করবেন বলে জামায়াত নেতারা জানিয়েছেন।
একটি সূত্র জানায়, মহাজোটের শরিকদল জাপার সাথে আওয়ামীলীগের ও ঐক্যফ্রন্টের সাথে জামায়াতের আসন বন্টন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। সিলেট-৫ আসনটি আওয়ামীলীগের কাছে চেয়ে বসেছে জাপা ও ঐক্যফ্রন্টের কাছে চেয়ে বসেছে জামায়াত। এতে আওয়ামীলীগ-বিএনপির দলীয় প্রার্থীরা আসন হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন। জোট-মহাজোটের সমীকরণে হতাশায় রয়েছেন বড় দুই দলের নেতারা। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা এ আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিতে না চাইলেও আসনটি ধরে রাখতে মরিয়া জাতীয় পার্টি। একই অবস্থা বিএনপির। তারা এবার কোনভাবেই জামায়াতকে ছাড় দিতে চাচ্ছেনা। জামায়াতের হাতে ধানের শীষ প্রতিক তুলে দিলে বিদ্রোহ করতে পারে নেতাকর্মীরা এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে ৪ দলীয় জোট গঠনের পর আসনটি জামায়াতের দখলে চলে যায়। বিএনপি জোটের প্রার্থী হয়ে জামায়াত নেতা ফরিদ উদ্দিন নির্বাচিত হওয়ার পর বিএনপিকে এড়িয়ে চলেছেন। এতে স্থানীয় বিএনপি সাংগঠনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সাংগঠনিক কার্যক্রমকে শক্তিশালী করতে এ আসনে বিএনপির কোন নেতাকে প্রার্থী দিতে নেতাকর্মীরা কেন্দ্রের কাছে জোর দাবী জানিয়েছে।
Leave a Reply